২. পুরানো প্রশ্ন ও উত্তর (১৯ আগস্ট-১৩ অক্টোবর ২০১৬)

amar uttor

১৩ অক্টোবর ২০১৬

তানহা,বরিশাল
প্রশ্ন: মনটা খারাপ হয়ে গেল,কেন এমন করলেন? ২ টা প্রশ্ন করলাম একটারও উত্তর দিলেন না।কেন এমন করলেন? আজ আর ঘুম আসবেনা, আপনাকে আর প্রশ্নই করবনা, বরিশাল দিয়া কত আশা নিয়া প্রশ্ন করলাম আর আপনি উত্তর দিলেন না।আরি! আরি!আরি! আমার আজ রাতের কান্নার জন্য আপনি দায়ী. আরি!
উত্তর: এই যে আমি তোমার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি! আমার দিকে একটু তাকাও, প্রতিদিন আমাকে কী কী করতে হয় যদি তার সবগুলোর কথা তোমাকে বলি, তুমি তাহলে আমার জন্যে ভেউ ভেউ কে কাঁদতে থাকবে। রাগ হয়ে থেকো না। ভাব ভাব ভাব। ঠিক আছে?

তাসনিম,কুমিল্লা,৭ম শ্রেণি
প্রশ্ন: ১।সরল বর্তনী কি? এটি কিভাবে কাজ করে?আমাদের পাঠ্যবইয়ে লেখা আছে যে,সরল বর্তনীতে স্থির ও চল দুই ধরনের বিদ্যুৎ রয়েছে।যখন এর সুইচ খোলা থাকে তখন এতে স্থির বিদ্যুৎ থাকে।কিন্তু যদি ব্যাটারি,বাল্ব আর সুইচ যদি একত্রে সংযুক্ত হয়ে সরল বর্তনী তৈরি করে তাহলে সুইচ খুলে দিলে তো সেটা আর সরল বর্তনী থাকেই না! তাহলে সরল বর্তনীতে স্থির বিদ্যুৎ কীভাবে আছে?
২। আমি যদি পৃথিবীর উত্তর মেরুর ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে একটি চুম্বককে সুতা দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে দেই তাহলে পৃথিবীর দক্ষিণ মেরু সেটাকে কীভাবে আকর্ষণ করে?

earths_magnetic_field
উত্তর: ১. তোমাদের পাঠ্যবইয়ে কী লেখা আছে আমি জানি না তাই সেটা নিয়ে কিছু বলতে পারছি না। কিন্তু তুমি যেটা বলেছ সেটা একশ ভাগ সত্যি। ২। তুমি এভাবে দেখতে পারো, ঠিক উত্তর মেরুতে দাঁড়িয়ে থাকলে দক্ষিন মেরুর আকর্ষণ হবে অনেক কম, উত্তর মেরুর আকর্ষণ হবে অনেক বেশি। দুটই খাড়া ভাবে। কাজেই চুম্বকটা খাড়া হয়ে থাকবে, চুম্বকের উত্তর মেরু নিচের দিকে।

প্রশ্ন: স্যার,বাংলাদেশ এত সুন্দর একটা দেশ। কিন্তু এই দেশের মানুষগুলো এত কুসংস্কারাচ্ছন্ন কেন?
উত্তর: কোন দেশে কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ নেই বল। আমেরিকার মত দেশে অনেক মানুষ আছে যারা বিবর্তন বিশ্বাস করে না। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট বানাতে চায়!

প্রশ্ন: আপনাকে Vincent van Gogh er “starry night” শিল্পকর্মের সাথে দেখে আমার খুব হিংসা লাগছে। এটা আমার সবচেয়ে প্রিয় শিল্পকর্ম

starry-night
উত্তর: হিংসা করার কিছু নেই। তুমি যখন বড় হয়ে নিউ ইয়র্কের MOMA তে এই ছবিটা দেখবে তখন তুমি আজকের দিনের কথাটা মনে করো!

প্রশ্ন: এরোস্পেস ও স্পেস ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি SpaceX এর সিইও ELon Musk ১টা বক্তব্য দিয়েছেন এই বলে যে, “In a million years we will either be extinct or in a lot of planets”, তার এই ভিশন সম্বন্ধে আপনার অভিমত জানাবেন স্যার ?
উত্তর: আমি তার সাথে পুরোপুরি একমত। সত্যি কথা বলতে কি আমি মনে করি মিলিওন বছরের অনেক আগেই আমরা বিশ্ব ভ্রহ্মাণ্ডের নানা গ্রহে ছড়িয়ে পড়ব। (আমি এটা নিয়ে একটা সায়েন্স ফিকশানও লিখেছিলাম!)

বাপ্পী, চট্টগ্রাম
প্রশ্ন: স্যার আমি যদি মঙ্গল গ্রহে যেতে চাই সেটা কি বেশি উচ্চাভিলাষী চিন্তা হয়ে যাবে?
উত্তর: হ্যাঁ, হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা যদি উচ্চাভিলাষী স্বপ্ন না দেখতাম তাহলে তো এখনো মানুষ না হয়ে শিম্পাঞ্জীর মতো গাছে গাছে হুপ হুপ শব্দ করে লাফ ঝাপ দিতাম!

প্রশ্ন: ঈদ উপহার হিসেবেও তো নতুন একটা লেখা দেয়া যেত। 🙁
উত্তর: এটা ছিল কোরবানী ঈদ, তাই বেচারা গরুদের মানসিক অবস্থার কথা চিন্তা করে কিছু দিলাম না।

উল্লাস (নওগাঁ, রাজশাহী)
প্রশ্ন: স্যার আমার কোনো প্রশ্ন নাই! কতদিনের সখ আমার যে আমি আপনার সাথে কথা বলবো.. কিন্তু সরাসরি তো পারছিনা। এই অনলাইন এর মাধ্যমে হলেও আপনাকে কিছু বলতে পারলাম। রিপ্লাই দেখে খুশি হবো যে জাফর স্যারের সাথে কথা বলছি। 🙂
উত্তর: কিন্তু কী রিপ্লাই দেব? ব্যাপারটা উল্টো হয়ে গেল না, আমিই তোমাকে প্রশ্ন করলাম?

টুম্পা, ঢাকা।
প্রশ্ন: স্যার কেমন আছেন? আমি খুব অসুস্ত। অনেক অনেক ডাক্তার দেখানো হচ্ছে, কিন্তু কেও রোগের নাম/কারন ঠিক ভাবে বলতে পারছে না। আমার পরিবার আমার পিছনে খরছ করে যাচ্চে। আমি একটা প্রাইভেট ভার্সিটি তে পরি। একটা আইটি ফার্মে জব ও করি খরচ কমানোর জন্য। কিন্তু নিজের কাছে খুব খারাপ লাগে ফ্যামিলির কথা চিন্তা করে। আমি জিন ভুতে বিশ্বাস করি না, কিন্তু আমার ফ্যামিলি মনে করে আমার সমস্যা জিন ভুতের কারনেই। আমার বড় বোনের সেইম সমস্যা ছিলো, যেই না বিয়ে হল অমনি সব ঠিক। তাই বাসা থেকে বিয়ের চাপ ও পাচ্ছি। সব মিলিয়ে আমি অনেক অশান্তিতে আছি। আপনি আমাকে কোন সাজেশন দিয়ে উপকৃত করবেন।
উত্তর: তুমি খুব অসুস্থ শুনে খারাপ লাগছে, কিন্তু যেহেতু অসুখটা কী ধরণের সেটা সম্পর্কে কিছু লিখনি তাই আমি কিছুই বলতে পারছি না, সাজেশন দিতে পারছি না। তবে যেহেতু তোমার বড় বোনের ঠিক এই অসুখ ছিল এবং বড় হওয়ার পর (তুমি লিখেছ বিয়ে হওয়ার পর) ভালো হয়ে গেছে তাই আমি নিশ্চিত তুমিও ভালো হয়ে যাবে। শুধু মাত্র জীন ভূতের উৎপাত থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্যে বিয়ে করা নিয়ে মজার গল্প লেখা যেতে পারে, কিন্তু সত্যিকার জীবনে এটা করার কোনো প্রয়োজন নেই। যখন তোমার ইচ্ছে করবে তখন হৃদয়বান একজন ছেলেকে বিয়ে করো!

প্রশ্ন: আসসালামুয়ালাইকুম স্যার। স্যার আমি পাওয়ার কেলকুলেসুন করতে পারছি না। Formula P=VI Cos theta। V ও জানি i ও জানি কিন্ত Cos theta কি? বা কিভাবে পাব?

i-and-v
উত্তর: তুমি কীসে পড় আমি জানি না, অনুমান করছি AC system এর power বের করতে চাইছ। V এবং I sinusoidal হলে তাদের ভেতরে phase এর যে পার্থক্য থাকে সেটাকে angle দিয়ে প্রকাশ করলে সেটা হবে theta.

জান্নাতুল কারিম, বড়লেখা মৌলভীবাজার থেকে,
প্রশ্ন: আমি একটা প্রশ্ন দেকেছি, যে ৮টা ৪ দিয়ে কিভাবে ১০০ হয়,, কিন্তু উত্তর টা হল এইভাবে 4x4x4+4×4+4×4+4=100 কিন্তু এই ৮টা ৪দিয়ে কিভাবে ১০০ হল আমি বুঝিনি, দয়া করে সার আমাকে বুজিয়ে বলবেন।।
উত্তর: গুনে দেখ 4x4x4+4×4+4×4+4 এ সব মিলিয়ে আটটা 4 রয়েছে। এখন এটা বের কর, 4x4x4+4×4+4×4+4 = 64+16+16+4 = 100. অর্থাৎ আটটা 4 এমন ভাবে ব্যবহার করেছি যে এটা দিয়ে 100 তৈরী হয়েছে।

তানজিল. ধানমন্ডি
প্রশ্ন: স্যার 0 ভাগ 0 অসংজ্ঞাইত কেন??
উত্তর: এটা অসংজ্ঞায়িত না হলে যা একটা ঝামেলা হতো সেটা আর বলার মত নয়। ধরা যাক এটা অসংজ্ঞায়িত না, তাহলে 0/0=1, আবার 1×0=0 এবং 2×0=0 কাজেই আমরা লিখতে পারি (1×0)/(2×0) = 1 অর্থাৎ (1/2)(0x0)=1 যেহেতু 0/0=1 কাজেই 1/2=1 যার মানে 1=2! অর্থাৎ তুমি তোমার বন্ধুর কাছ থেকে দুইশ টাকা ধার নিয়ে তাকে একশ টাকা ফেরত দিলেই চলবে।

হাসান, বায়া,রাজশাহী
প্রশ্ন: স্যার, আপনার দৈনন্দিন রুটিন কি
উত্তর: আপাতত মনে হচ্ছে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বসে বসে তোমাদের প্রশ্নের উত্তর দেয়া!

Assekul Islam Nur,Rahichor,Chapainawabgonj,Rajshahi
প্রশ্ন: Uncle,how does it possible to 5)25(14, মানে ২৫ কে ৫ দারা ভাগ,???,
উত্তর: তুমি এই গণিত কোথা থেকে আবিষ্কার করেছ আমি জানি না! ভাগ করার সময় বাম থেকে ডানে (অর্থাৎ বড় দশক থেকে কম দশকের দিকে) যেতে হয়। তুমি উল্টোটা কুরছ!

MD.Sujon Daudkandi,Comilla
প্রশ্ন: স্যার আপনার কাছে ফেইসবুক মানে শুধু সময় নষ্ট মনে হয় কেন..?আজকাল ফেইসবুক এর মাধ্যমে আনেকে আয় করতে পারছে,একে অপরের সাথে ফ্রি কথা বলতে পারছে.আমিও আপনার ওয়েব সাইটের নাম ফেইসবুক এর মাধ্যমে পেলাম.
স্যার আমি আপনার মতামত জানতে চাই,ফেইসবুক মানে কি শুধুই সময় নষ্ট..?
উত্তর: আমি এই সাইটটা তৈরী করেছি ছোটোদের জন্যে, তাদের জন্যে অবশ্যই সময় নষ্ট। সেদিন আমি হলিক্রস কলেজের সায়েন্স ফেয়ারে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখেছি বেশির ভাগ ছাত্রীরা আর ফেসবুক করে সময় নষ্ট করে না। কী চমৎকার!!

সোহাগ,যশোর
প্রশ্ন: স্যার, আমার 12বছর বয়সে AppendicIte আপারেশন করা. কিন্তু আমায় ইচ্ছা বড় হয়ে কোনো সরকারী চাকরি করার. আমি কি পারবো ?
উত্তর: এপেন্ডিক্স (appendix) হচ্ছে মানুষের শরীরের একটা পুরোপুরি অপ্রয়োজনীয় জিনিষ। ইনফেকশান হয়ে মানুষকে যন্ত্রনা দেয়া ছাড়া এর আর কোনো কাজ নেই। এটা ফেলে দিয়ে তুমি এখন অন্যদের তুলনায় একজন বেশী নিরাপদ মানুষে পালটে গেছ। শুধু সরকারী চাকুরে কেন তুমি চাইলে মহাকাশচারীও হতে পারবে।

প্রশ্ন: স্যার,আমি পঞ্চম শ্রেণির একজন ছাত্র।আপনার লেখার একনিষ্ঠ ভক্ত আমি।একদিন ইন্টারনেটে এই ওয়েবসাইটটি খুঁজে পেলাম।আমি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করতে চাইঃ
আমরা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রদের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার জন্য প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়।সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতি প্রণীত হওয়ার পরও আমাদের প্রচুর মুখস্ত করতে হয়(কথাটা হতাশাজনক হলেও সত্যি)।মুখস্ত করার দ্রুত উপায় কী?

chimp
উত্তর: সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতি প্রণীত হওয়ার পরও তোমাদের মুখস্ত করতে হচ্ছে জেনে দুঃখ পেলাম। মানুষের মস্তিষ্ক মুখস্ত করার জন্যে তৈরী হয়নি। টুকাটাক নামতা, কিংবা আবৃত্তি করার জন্যে কবিতা মুখস্ত করা যেতে পারে কিন্তু লেখাপড়া মুখস্ত করার কথা না। জানার কথা, বোঝার কথা। কেউ যদি লেখা পড়া মুখস্ত করে সে আসলে নিজের সর্বনাশ করে। আমি জেনেশুনে তোমার সর্বনাশ করতে দিতে পারি না! বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় দেখা গেছে মানুষ থেকে শিম্পাঞ্জী বেশী ভালো মুখস্ত করতে পারে। কাজেই কেউ যদি মুখস্ত করে সে আসলে শিম্পাঞ্জীর সাথে কম্পিটিশন করে।

প্রশ্ন: হাম্বা, হাম্বা….. ঈদ মোবারক!!
উত্তর: কোরবানী ঈদের সময় এই হাম্বা ডাকটা কী তোমার জন্যে বিপদজনক হয়ে গেল না?

মাকসুদা মিয়ানমার থেকে
প্রশ্ন: আমার আগের প্রশ্নের খুব সুন্দর ও যুক্তিসম্মত উত্তর পেয়েছি।উত্তরটা আমার মনের সব দ্বিধা দূর করে দিয়েছে।তাই সাহস করে আরেকটা প্রশ্ন করছি।আমার ছেলে সোহম মিয়ানমারে একটা ইন্টারন্যাশনাল সকুলে যায়।এদের পড়ানোর পদ্ধতি খুব চমৎকার।ইংরেজী বর্ণমালা ও বলতে,লিখতে ও পড়তে পারে। তার সাথে এরা স্প্যানীশ শেখায়। ওর বয়স এবার পাঁচ হবে।আমি বাসায় বাংলা বর্ণমালা শেখাই।একবারে দুটো করে অক্ষর লিখে দেই।ও সেটার উপর বারবার করে হাত ঘুরায় আর মুখে উচ্চারণ করে।পদ্ধতিটা কি ঠিক আছে না অন্যকোনো ভালো উপায়ে শিখানো যায়।সোহম স্বরবর্ণ যত সহজে রপ্ত করেছে,ব্যজ্ঞণবর্ণ ততোটা সহজে হচ্ছে না।আমার কি কোথাও ভূল হচ্ছে।(সোহম বেশ সাবলীল ভাবে বাংলা বলতে পারে)।ভালো থাকবেন।
উত্তর: আমি একেবারে ছোটদের বাংলা (কিংবা যেকোনো ভাষা) শেখানোর টেকনিক শিখিয়ে দিচ্ছি। আমার বাচ্চারা এভাবে পড়তে শিখেছে, আমার বুদ্ধি শুনে আমার তরুণ সহকর্মীদের বাচ্চারাও এভাবে পড়তে শিখেছে। টেকনিকটা খুবই সোজা, তাদেরকে বই পড়ে শোনানো। তবে পড়ে শোনানোর সময় বাচ্চাটি যেন বইটি দেখতে পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। মানুষের মস্তিষ্ক একটি অসাধারণ জিনিষ, এটি কি রহস্যময় ভাবে কাজ করে সেটি বোঝা কঠিন। বাচ্চাটিকে যখন পড়ে শোনানো হয় তখন সে নিজে নিজেই কোন অক্ষরটি কী বুঝে নিতে শুরু করবে, তাকে বলার কোনো প্রয়োজন নেই। শুধু লক্ষ রেখ যে বইটা পড়ে শোনাচ্ছ সেটা যেন বাচ্চার কাছে ইন্টারেস্টিং মনে হয়। এই পদ্ধতিতে একটা বাচ্চা তিন চার বছরেও পড়তে শিখে যেতে পারে। পরীক্ষিত পদ্ধতি, বিফলে মূল্য ফেরত!!

Monipuripara, Dhaka
প্রশ্ন: আমার বাবা গল্পের বই পড়া বন্ধ করে দিয়েছে । But I cannot live a single day without reading books. What to do , দাদু ?
উত্তর: বই পড়া বন্ধ করে দেয়া আর খাওয়া বন্ধ করে দেয়ার মাঝে এক বিন্দু পার্থক্য নেই। কারো খাওয়া বন্ধ করে দিলে বেঁচে থাকার জন্যে সে লুকিয়ে বা চুরি করে খেলে যেরকম কোনো অপরাধ হয় না, এখানেও তাই। তোমার মনটাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে তুমি যদি লুকিয়ে কিংবা চুরি করে বই পড় তোমার কোনো অপরাধ হবে না। তবে দৈনন্দিন লেখা পড়ায় কোনো ক্ষতি হতে পারবে না।

Robiul Islam Niloy.. Mymensingh.
প্রশ্ন: sir,you were right. coaching baad dewar por ami aro valo korchi.Plus,onek time save hocche Thank you 🙂
উত্তর: যারা এই সাইটটাতে প্রশ্নের উত্তর দেখছ, সবাই দেখ নিলয় কি লিখেছে। দেখেছ? আবার দেখ। আবার দেখ। (ধন্যবাদ নিলয়!)

প্রশ্ন: একটা বিষয় কখনো জানতে পারলাম না ।হুমায়ুন আহমেদ স্যার ও আপনি কি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সময় পছন্দ করে রসায়ন ও পদার্থ বিজ্ঞান নিয়েছিলেন নাকি ভর্তি পরীক্ষার মেধাক্রম অনুসারে বিষয় ২টা পেয়েছিলেন???
উত্তর: তখন ভর্তি পরীক্ষা হতো না। আমাদের যার যেটা পড়ার সখ হতো সেটা পড়তাম। আমি পদার্থ বিজ্ঞান আর হুমায়ুন আহমেদ রসায়ন সখ করে পড়েছি

প্রশ্ন: প্রিয় স্যার, সালাম ও ভালোবাসা নিবেন। আপনাকে অনেক বেশী ভালোবাসি। কেউ যদি আপনার ব্যাপারে উলটা পালটা কিছু বলে তাহলে মেজাজ চিড়িত করে জ্বলে উঠে, অনেক কষ্টে মারামারি করা থেকে নিজেকে আটকাতে হয়। যখন ছোট ছিলাম, শুধু সমবয়সীদের সাথেই এমন তর্কাতর্কি করতে হত। কিন্তু বড়রা যখন উলটা পালটা কথা বলে তখন কি করবো বুঝিনা। অফিসের বসটাইপ কারো মুখে এমন কথা শুনলে নিজেকে আস্ত একটা হিপোক্রিট মনে হয়, ইচ্ছা করে সব ছেড়েছুড়ে দূরে কোথাও চলে যাই।
উত্তর: অফিসের বস টাইপের মানুষের সাথে আমার বিষয়ে কথা বলার দরকারটি কি? আমি লেখালেখি করি, আমার বই ভাল লাগলে পড়বে ভালো না লাগলে পড়বে না। ব্যাস, কেস ক্লোজড! প্লিজ প্লিজ প্লিজ আমাকে নিয়ে তর্কাতর্কি করতে যেও না। আমার গণ্ডারের চামড়া নিয়ে আমি মহা সুখে আছি- তোমারাও থাকো!

প্রজ্ঞা,৭ম শ্রেণী,কুমিল্লা
প্রশ্ন: স্যার,আপনার লেখা অনেক বছর ধরে পড়ছি। ছোটবেলায় দেখতাম সবাই আপনার প্রশংসা করে।এখন বড় হয়ে দেখছি অনেকে আপনাকে পছন্দ করে না।আপনি বলেন আপনার গায়ের চামরা গন্ডারের চেয়েও মোটা তাই আপনি এসব সহ্য করতে পারেন।কিন্তু আমার এসব সহ্য হয়না।কেউ আপনার সম্পর্কে বাজে কথা বললে তাকে ধরে পিটাতে ইচ্ছে করে।খুব সাবধানে এসব মানুষকে এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করি।এখন মনে হয় বনবাসে যেতে হবে।আপনাকে অনেক ভালোবাসি। বাংলাদেশে আপনাকে নিয়ে বাজে কথা বলে এরকম মানুষ আছে দেখলে খুব কষ্ট পাই। আমার কোনো প্রশ্ন নেই,তাই আমার কষ্টের কথাটা আপনাকে জানালাম।ভালো থাকবেন স্যার,আপনি ভালো না থাকলে আমরা ভালো থাকতে পারবনা।আমার মন খারাপ থাকলে আপনার লেখা পড়ি যা একদম যাদুর মত কাজ করে।আমার জীবনটাকে এত সুন্দর করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
উত্তর: হা হা হা! তুমি ক্লাশ সেভেনে পড় আর তোমার ধারণা হয়েছে তুমি বড় হয়ে গেছ? অন্যের জন্যে তোমাকে কেন বনবাসে যেতে হবে? দরকার হলে অন্যেরাই বনবাসে যাক। লিখেছ আমার সম্পর্কে কেউ খারাপ কথা বললে তোমার মনে কষ্ট হয়। যারা আমার সম্পর্কে খারাপ কথা বলছে কিংবা আমাকে মেরে ফেলার জন্যে লাফ ঝাপ দিচ্ছে তাদের রাগের কারণটা জান? তার কারন হচ্ছে তোমাদের বয়সী অনেক ছেলেমেয়েরা আমার লেখালেখিকে ভালোবাসে, এমন কি আমাকেও ভালোবাসে। শুধু তাই না, তোমাদের অনেকেই আমি যে কথাটা বলি সেটা বিশ্বাস কর। কাজেই তোমরা যতদিন আমার লেখালেখি পড়ে আনন্দ পাবে আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। সত্যি কথা বলতে কি আমি আমার জীবনে তোমাদের কাছ থেকে এত ভালোবাসা পেয়েছি যে এখন আমি মরে গেলেও আমার কোনো দুঃখ থাকবে না!

Russell, Gazipur
প্রশ্ন: Sir, I am interested in learning how do you cope with when people surrounding you speak untruth or hateful remarks about you? I am respectful for other comments and their view, however, those untruth/hateful remarks creates lot of interruption in inner peace of mind and block my thought process.
উত্তর: কাজটা খুবই সোজা, আমি তাদের কথায় বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দেই না। আমার উপর তোমার যদি বিশ্বাস থাকে তাহলে তোমরাও দিও না। কে কি বলেছে তাতে কি আসে যায়? আমি তো ইলেকশানে দাড়াব না যে আমার সম্পর্কে খুব ভালো একটা প্রচারণা দরকার। ভালো মন্দ মিলিয়ে আমি যে মানুষ সেটা তোমরা যদি মেনে নাও তাহলেই তো যথেষ্ট! অন্যদের নিজের মনের শান্তি নষ্ট করতে দিও না। আমার মনের শান্তি যদি নষ্ট না হয় তাহলে তোমার মনের শান্তি নষ্ট হবে কেন?

আবির,চট্টগ্রাম
প্রশ্ন: স্যার আপনার অলটাইম ফেভারিট ফরেন মুভির নাম জানতে চাই ?

matrix
উত্তর: অনেক। একটা হচ্ছে matrix.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রশ্ন: কিছুদিন আগে নিজের অনেক সমস্যা জানিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম। এত প্রেরণাময় উত্তর হবে ভাবিনি। একটা পর্যায়ে বলেছিলাম বই পড়ার অভ্যাস ছুটে যাচ্ছে। আপনার প্রেরণায় আবার শুরু করেছি। আজকে ”গ্রামের নাম কাঁকনডুবি” পড়লাম। হঠাৎ খুব ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে আমি পারবো সকল প্রতিকুলতার মুখোমুখি হতে। আপনার একটা কথা একশ’র উপর দু’শো ভাগ সত্যি। বেশি বেশি বই পড়ার চেয়ে বিকল্প কিছু নেই। সব কিছু জানার জন্য, ভালো মানুষ হওয়ার জন্য এবং সর্বোপরি নিজের ভালো লাগার জন্য একটা ভালো বই সবচেয়ে সাহায্যকারী।অনেক ধন্যবাদ আমাকে আমার আনন্দ ফিরিয়ে দেয়ার জন্য।
পুনশ্চ: আমি আমার ‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক’ কথাটি পরিবর্তনের চেষ্টা শুরু করেছি। আমাকে আশীর্বাদ করবেন। ধন্যবাদ। 🙂
উত্তর: থ্যাঙ্কু “নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক”! আমার উত্তরটা তোমার কাছে প্রেরণাময় মনে হয়েছে জেনে আমিও কয়েক কেজি প্রেরণা পেয়ে গেলাম!

আসিফ, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি
প্রশ্ন: আমি আপনার কিছু লিখা পড়ে খেয়াল করলাম যখন কোনো চরিত্র ক্ষুধার্ত থাকে তখন সে বলে “এত খিদে লেগেছে যে মনে হচ্ছে একটা আস্ত ঘোড়া খেয়ে ফেলতে পারব।” সবসময় কেনো ঘোড়ার কথাই বলে? অন্য কোনো প্রাণী কেন নয়?

horse
উত্তর: কঠিন প্রশ্ন। আমার মনে হয় ছাগল একটু বেশী ছোট, হাঁতি একটু বেশি বড়, ঘোড়া মোটামুটি ঠিক সাইজ, বেশী বড়ও না আবার বেশী ছোটও না। আর লেখকদের একটু বাড়িয়ে চাড়িয়ে লিখতে হয় তাই আস্ত ঘোড়া খেয়ে ফেলার ইচ্ছা প্রকাশ করার মাঝে কোনো দোষ নেই। তোমার যখন খুব খিদে লাগে তোমার মনে হয়নি যে তুমি একটা আস্ত ঘোড়া খেয়ে ফেলতে পারবে?

খালেদ হাসান হামজা, দশম শ্রেণি
প্রশ্ন: স্যার, আমরা আকাশে যে তারা দেখি সেগুলো কি সবই আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির তারা?? নাকি অন্য গ্যালাক্সির তারাও আমরা দেখতে পাই??

milkywayউত্তর: খালি চোখে যেগুলো দেখি সব আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির। খালি চখে এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সিটাও দেখা যায়, তবে তার ভেতরকার তারাগুলো আলাদা করে বোঝা যায় না।

প্রশ্ন: ইয়েশিম আপুদের “কান পেতে রই” এর ভলিন্টিয়ার হতে চাই।কিভাবে হব?
উত্তর: খুব সোজা

নাঈম,হবিগঞ্জ
প্রশ্ন: আপনার লেখা প্রথম বইয়ের নাম কি?

20150326_122637-1
উত্তর: কপোট্রনিক সুখ দুঃখ।

সুমিত চন্দ, বয়স:১০, জুড়ী,মৌলভীবাজার
প্রশ্ন: আমি আপনার জন্য একটি ছবি এঁকেছি। এটা কোন ঠিকানায় পাঠালে আপনার কাছে পৌছবে?
উত্তর: “মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শাবিপ্রবি, সিলেট ৩১১৪” এই ঠিকানায় পাঠিয়ে দাও। আমার একটা ছবি আঁকার জন্যে এডভান্স ধন্যবাদ।

শারমিন শাখী, খুলনা।
প্রশ্ন: স্যার, আপনার সহজ ক্যালকুলাস বইয়ের প্রথম সমস্যায় (গাড়ির গতি) ৫ম সেকেন্ডে কতটা পথ অতিক্রম করবে একটু বলবেন প্লিজ? ৬ষ্ঠ ও ৭ম সেকেন্ডটাও বলে দিলে আরো ভাল হয়।আসলে আমি গনিতে খুবই কাচা (ছোটকাল থেকেই শুনছি- যে কারণে স্কুল আমাকে সায়েন্স নিতে দেয়নি :'( , বুঝতেই পারছেন, খুবই লজ্জার বিষয়) ক্যালকুলাসের “ক” ও আমি বুঝি না। কিন্তু, আপনার বইতে v=10t বের করার আগে কোন এক “১০” আমি বের করলাম- সেইটা কী তা একটু বুঝতে চাচ্ছি। সরাসরি বলতেও কনফিডেন্স পাচ্ছি না- নিশ্চয়ই গাধা প্রমাণিত হব আবার! যদি মেলে তবে আপনাকে নেক্সট কোশ্চেন করব।
উত্তর: তুমি যদি প্রথম টেবিলটা ভালো করে দেখে অতিক্রান্ত দূরত্ব আর সময়ের মাঝে একটা সম্পর্ক বের করতে চাও, তাহলে দেখবে এটা আসলে 5xt^2 ( 5 x t x t). (না বুঝলেও ক্ষতি নেই, কারণ সত্যকার সমস্যা দেয়া হলে সেটা আসলে বলে দেয়া হবে, কোনো কিছু দেখে অনুমান করতে হবে না।) কাজেই ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম সেকেন্ডে অতিক্রান্ত দূরত্ব হবে 5×5^2 = 125, 5×6^2 = 180 , এবং 5×7^2 = 245. না, প্রশ্ন করে তুমি কখনোই গাধা প্রমানিত হবে না। যাদের মনের ভেতর প্রশ্ন আছে কিন্তু মুখ ফুটে প্রশ্নটা করার সাহস পায় না, তারা অনেক সময় নিজের কাছে গাধা প্রমানিত হয়!

মীম রহমান অতি, পিরোজপুর।
প্রশ্ন: স্যার, ৩১ জুলাই এক সেমিনারে আপনি বলেছিলেন, “সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সিলেট অন্য বিভাগের লোকদের নিচুজাত মনে করে।” সত্যিই কি সিলেটীদের মন মানসিকতা এমন! কথাটা যদি একটু বুঝিয়ে বলতেন।
উত্তর: হায় হায়! তুমি সত্যিই বিশ্বাস কর আমি এরকম একটা কথা বলতে পারি?

অনসূয়া আদাবর, ঢাকা।
প্রশ্ন: প্রিয় স্যার, ছোট্ট একটা প্রশ্ন করছি। প্রিয় মানুষ, কাছের মানুষ হারাবার যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে আপনিও গিয়েছেন জানি। আমার প্রশ্নটা হচ্ছে শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে কিভাবে বাকী পথটা পাড়ি দিয়েছিলেন?
উত্তর:  আমরা বলি শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে ফেলব, আসলে এটা একটা কথার কথা। যখন খুব প্রিয়জন চলে যায় তখন এই ভালো ভালো সুন্দর সুন্দর কথা কোনো কাজে আসে না। কষ্টটার ভেতর দিয়ে যেতে হয়, শুধুমাত্র সময়, দীর্ঘ সময় কষ্টের তীব্রতাটা কমিয়ে আনতে পারে। আমার জানামতে আর কিছু নেই।